দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমেদ বলেছেন, অনেক পিলারের ওপর ইতিহাস দাঁড়ায়। কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে একটা ‘বঙ্গবন্ধু’ পিলারের ওপর দাঁড় করিয়ে দিলেন। একজন নেতার একটা ন্যারেটিভেই তারা সীমাবদ্ধ ছিলেন। দেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। এখানে অনেক মানুষের অবদান হারিয়ে গেছে; বিশেষ করে গ্রামবাংলার তরুণ, কিশোর, বীরাঙ্গনা– তাদের কাহিনীগুলো।
শনিবার ‘শতাব্দীর কণ্ঠস্বর তাজউদ্দীন আহমদ: কন্যার চোখে, পুত্রের চোখে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য। এতে তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমদ ও ছেলে সোহেল তাজ কথা বলেন। শারমিন আহমেদের লেখা ‘নেতা ও পিতা’ বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য।
শারমিন আহমেদ বলেন, তরুণরা যদি মানুষের সেবা করতে সামনে এগিয়ে যেতে চায়, তাহলে আমরা পাশে আছি। কিন্তু এই মুহূর্তে একেবারে সরাসরি রাজনৈতিক দল করার চিন্তাভাবনা নেই।
কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আহমাদ মোস্তফা কামাল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। তিনি সোহেল তাজের কাছে জানতে চান, আওয়ামী লীগের হাল কি তাজউদ্দীন পরিবার বা সোহেল তাজ ধরবেন?
এই প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, নির্দিষ্ট কিছু দায় আওয়ামী লীগ মেনে না নিলে এ দলের নেতৃত্বে আসার প্রশ্নই ওঠে না। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব তখনই নেওয়ার প্রশ্ন আসবে, আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে যখন আত্মসমালোচনা শুরু করবে, তাদের কর্মকাণ্ডগুলো যখন স্বীকার করবে, যারা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে, তারা জবাবদিহি করবে। যারা হত্যা, গুম, খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেবে এবং আওয়ামী লীগ যখন পরিষ্কার হবে, তারপরে তারা যদি চায় আমি নেতৃত্বে আসি, তখন আমি বিবেচনা করব, এর আগে নয়।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিংগুলোতে বারবার তাজউদ্দীন আহমেদ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ করেছেন। আমার মা-ও তাঁর জায়গা থেকে অনেকবার অসম্মান হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবাদ করেছেন। ৩ নভেম্বর জেল হত্যার মাধ্যমে প্রমাণ হয়, আমার বাবা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সোহেল তাজ ও শারমিন আহমেদের হাতে ‘নেতা ও পিতা’ বইয়ের নতুন সংস্করণের কপি তুলে দেন ঐতিহ্যর প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাইম।
খুলনা গেজেট/এইচ